মল্লভুম বিষ্ণুপুর

মল্লভূম বিষ্ণুপুরে প্রথা মেনে কামানের তোপে নির্ণয় সন্ধিক্ষণ,নবমীর নিশুতি রাতে মহামারী ঠেকাতে খচ্চর বাহিনীর অর্চনা।

মহানবমীর গভীর রাতে রাজ -অন্তঃপুরের লক্ষীঘর থেকে মহামারী দেবীর পট মূর্তি আনা হয় মৃন্ময়ী মন্দিরের গর্ভগৃহের পিছন দিকে। পূজারী দুই ব্রাহ্মণ ও রাজপরিবারের সদস্য ছাড়া কেও এই পুজোয় অংশ নিতে পারেন না।একটি মাত্র প্রদীপ জ্বালিয়ে,ঘট ও পটে দেবীর আরাধনা করা হয়। পুরোহিত পিছন ফিরে পট পুজো করেন।

মল্লভূম বিষ্ণুপুরে প্রথা মেনে কামানের তোপে নির্ণয় সন্ধিক্ষণ,নবমীর নিশুতি রাতে মহামারী ঠেকাতে খচ্চর বাহিনীর অর্চনা।
X

বাঁকুড়া২৪x৭প্রতিবেদন : প্রথা মেনে কামানের তোপ ধ্বনিতে মল্লভূম বিষ্ণুপুরে নির্নয় করা হল সন্ধিক্ষণ। কামানের তোপের শব্দে সারা মল্লভূম জুড়ে এই সন্ধিক্ষন নির্ণয়ের প্রথা চলে আসছে। এবার তা পড়ল ১০২৭ বছরে। মূর্চার পাহাড়ে দাগা হল কামানের তোপ।এই তোপ ধ্বনি মল্লের রা নামে পরিচিত।এই মল্লের রা শুনতে হাজার,হাজার মানুষ আজ ভীড় জমান মুর্চার পাহাড়ের পাদদেশে। সন্ধিক্ষণের ঠিক পরেই নবমী। আর নবমীর নিশুতি রাতেই মহামারীর দেবী খচ্চর বাহিনীর আবাহনের রীতি রয়েছে মল্লরাজ বাড়ীর দূর্গাপুজোয়।কথিত আছে এই দেবীকে তুষ্ট করতে পারলেই মেলে মহামারী থেকে মুক্তি।

যখনই মল্লভূমে মহামারীর প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তখনই মল্লভুম কে মহামারীর থেকে রক্ষা করেছেন দেবী খচ্চর বাহিনী। ইনিই মহামারী বা অতিমারীর দেবী। খচ্চরের ওপর অধিষ্ঠাত্রী এই দেবীর ভয়াল রূপ দর্শণ করা চলে না। দর্শণ করলেই সর্বনাশ। তাই দেবীর অর্চনা করতে হয় পিছন ফিরে। এই পুজো, অর্চনায় দেবীকে তুষ্ট করলেই মেলে মহামারী থেকে মুক্তি।মহা নবমীর নিশুতি রাতে এই দেবী খচ্চর বাহিনীর পুজোর রীতি চলে আসছে মল্লরাজ পরিবারে।শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমীর গভীর রাত্রে রাজ -অন্তঃপুরের লক্ষীঘর থেকে মহামারী দেবীর পট মূর্তি আনা হয় মৃন্ময়ী মন্দিরের গর্ভগৃহের পিছন দিকে। এই দেবীর অর্চনা প্রকাশ্যে করা চলেনা।

পূজারী দুই ব্রাহ্মণ ও রাজপরিবারের সদস্য ছাড়া কেও এই পুজোয় অংশ নিতে পারেন না। কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ। মহা নবমীর নিশুতি রাতে একটি মাত্র প্রদীপ জ্বালিয়ে, ঘট ও পটে দেবীর আরাধনা করা হয়। পুরোহিত পিছন ফিরে পট পুজো করেন। প্রথা মেনে ৫ পোয়া (১.২৫ কেজি)করে গোবিন্দভোগ চাল, মুগ ডাল ও দেশী ঘিয়ের সাথে কাঁচকলা, রাঙ্গা আলু ও সৈন্ধব লবণ দিয়ে তৈরি ভোগ নিবেদন করা হয় দেবীকে। পূজোর শেষে ব্রাহ্মণদ্বয় ও রাজপরিবারের সদস্যরা প্রসাদ গ্রহণ করেন এবং মধ্যরাত্রেই, সূর্যোদয়ের পূর্বেই সমস্ত কিছু বিসর্জন করে, দেবী পট ফের রাজ-অন্তঃপুরে প্রবেশের মাধ্য দিয়ে পূজার সমাপ্তি ঘটে।

দেবী তুষ্ট হলেই তিনি মহামারীর থেকে রক্ষা করবেন ভক্তকুলকে এমনটাই বিশ্বাস। এই পূজার প্রচলন করেছিলেন ৪৯তম মল্লরাজ বীর হাম্বীর।

👁️‍🗨️দেখুন🎦ভিডিও। 👇



Next Story