শহর বাঁকুড়া

রিপোর্ট আসার আগেই করোনা উপসর্গে মৃত রোগীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে কাঠ গোড়ায় বাঁকুড়া মেডিকেল। শুরু বিভাগীয় তদন্ত।

করোনা উপসর্গে মৃত রোগীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে বিতর্কে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এখানকার মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি পুরুলিয়ার এক বাসিন্দা মারা যাওয়ার পর মৃতদেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় অথচ মৃতদেহ সৎকার করার পর মৃত ব্যক্তির কোভিড রিপোর্ট পজেটিভ আসে।এই ঘটনা কার গাফিলতির জন্য হয়েছে তা চিহ্নিত করতে বিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রিপোর্ট আসার আগেই করোনা উপসর্গে মৃত রোগীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে কাঠ গোড়ায় বাঁকুড়া মেডিকেল। শুরু বিভাগীয় তদন্ত।
X

বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত এক রোগীর দেহ করোনা পরীক্ষার ফল আসার আগেই তার পরিবারের হায়ে তুলে দেওয়ার ঘটনায় কাঠ গোড়ায় বাঁকুড়া মেডিকেল। এদিকে, এই ঘটনা কার গাফিলতির ফলে ঘটেছে তা চিহ্ণিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে।

জানা গেছে, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন পুরুলিয়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার সন্ধ্যে নাগাদ তার মৃত্যু হয়। রাতেই মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বুধবার সকালে এই রোগীর করোনা পরীক্ষার ফল পজেটিভ আসে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে যায় হাসপাতাল জুড়ে। ততক্ষনে যা হওয়ার হয়ে গেছে। মৃত ব্যক্তির পরিবার সাধারণ ভাবেই মৃতদেহের সৎকার করে ফেলেছেন।করোনা সতর্কতা বিধি না মানায় পরিবারের লোকজন অজান্তেই ছড়িয়ে ফেলেছেন মারন রোগের বিষ। এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়ার নয়। এমনকি, পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের নজরেও আনা হয়নি এই ঘটনা। এমনটাই খবর পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সুত্রে।

তবে, বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের অনেক দেরিতে হলেও টনক নড়ে। সূত্রের খবর বিকেলের দিকে পুরুলিয়াকে বিষয়টি জানানোর তোড়জোড় শুরু হয়। ইতিমধ্যেই এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কান্ড বাঁকুড়া মেডিকেলে কি করে ঘটল তা নিয়ে না প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখানে হু এবং আইসিএমআরের গাইড লাইন শিকেয় তুলে করোনা রোগীর মৃতদেহ সৎকার করার দায় মেডিকেলের কর্তারা এড়াতে পারেন না। এমন প্রশ্ন তুলছেন খোদ মেডিকেলেরই চিকিৎসকদেরই একাংশ।


তাদের বক্তব্য, যেটা সব হাসপাতালই মেনে চলছে তা হল : যে রোগীর কোভিড টেস্টের জন্য লালারস পাঠানো হয়ে থাকে, সেই রোগী মারা গেলে টেস্টের ফল না আসা পর্যন্ত মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় না। ফল নেগেটিভ এলে তবেই পরিবার দেহ পায়। আর পজেটিভ হলে হু এর গাইড লাইন মেনে মেডিকেল প্রশাসনের উদ্যোগে মরদেহ পোড়ায়। কিন্তু এক্ষেত্রে কার নির্দেশে এই রোগীর মৃত দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।

এদিকে এই নিয়ে জোর চাপান উতোর শুরু হয়েছে মেডিকেলে। কিন্তু যা ক্ষতি হওয়ার তা আর ঠেকানোর উপায় নেই। নিজেদের দোষ ঢাকতে হাসপাতালের কর্তা ব্যক্তিরা সংবাদ মাধ্যমের কাছে এবিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন। এখন দেখার মেডিকেলের এই গাফিলতির জন্য কত জনের মধ্যে ছড়ায় কোভিড মারণ ভাইরাস? তবে সতর্কতা মুলক ব্যবস্থা হিসেবে এই ব্যক্তির শবদাহ করতে যারা গিয়েছিলেন বা মৃত দেহের সংস্পর্শে আসা লোকজনের যাথে যাদের নিবিড় যোগ ঘটেছে তাদের, কোভিড টেস্ট করা ও তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনকে করতেই হবে। না হলে, সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যাবে।

পাশাপাশি, এমন ঘটনা ঠেকাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের সক্রিয় হতে হবে। তা না হলে এমন কাণ্ড ঘটবে আকছার! তা বলাই বাহুল্য।

Next Story