হেরিটেজ দূরঅস্ত, বিশ্ব বরেণ্য সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের জরাজীর্ণ জন্মভিটে সাংবাদিক দিবসের লজ্জা!
বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : আজ বিশ্ববরেণ্য সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের ১৫৮ তম জন্ম জয়ন্তী।সারা দেশের সাথে বাঁকুড়া জেলা জুড়েও এই দিনটি সাংবাদিক দিবস উপলক্ষ্যে পালন করলেন সাংবাদিকরা।বাঁকুড়া শহরে প্রভাত ফেরী,পোদ্দার পাড়ায় রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান সহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক্ট প্রেস ক্লাব।পাশাপাশি, বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক্ট জার্নালিস্ট ক্লাব মিডিয়া ভবনে এদিন রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে।এছাড়া জেলা জুড়ে নানা প্রান্তে পালিত হয় সাংবাদিক দিবস।
এই সাংবাদিক দিবসেই বাঁকুড়া২৪X৭ হাজির হয়েছিল রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের পাঠকপাড়ার জন্ম ভিটেতে। এক সময় যার লেখণী বৃটিশ সাম্রাজ্যের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল। তার সম্পাদিত মর্ডান রিভিউ, প্রবাসী সেই সময় দেশের সাংবাদিকতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। যিনি ১৯২৬ খ্রীস্টাব্দে জেনিভায় অনুষ্ঠিত লীগ অফ নেশনস এর বিশেষ অধিবেশনে ভারতবর্ষের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সেই বাঁকুড়ার সুসন্তান রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ভিটে তার জন্মের ১৫৭ বছর পরেও অবহেলিত। জরাজীর্ণ, ভগ্নপ্রায় জন্ম ভিটের দেওয়ালে ইতি,উতি ফাটলের বিস্তার বার্ধক্যের চিহ্ণ বহন করে চলেছে।বাড়ীর আনাচে,কানাচে বট,অশ্বত্থের উঁকি,ঝুঁকি।
পলস্তরা খসা বাড়ীর একতলায় রামানন্দ বাবুর যে ঘরটিতে জন্মেছিলেন সেটিও নষ্ট হতে বসেছে।সেই ঘরেই এক কোনে এখনও রয়ে গেছে পৈতৃক কাঠের সিন্ধুক। ওপর তলায় এখনও রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যবহৃত চেয়ার তাঁর স্মৃতি বয়ে চলেছে।রামানন্দ বাবুর পরবর্তী প্রজন্মের আনেকেই এখন জেলার বাইরে, কেও বা ভিন রাজ্যে কর্মসুত্রে প্রতিষ্ঠিত।তারা এই বাড়িতে পা রাখেন নি বহুদিন।তবে ইদানিং তাঁর এক নাতি দেবেনন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় মুম্বাই থেকে বাঁকুড়ায় এসে এই বাড়ীতে আছেন।তিনি মুম্বাইয়ে সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠত। এখন বাঁকুড়ার আছেন।তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগ এই বাড়ির সামান্য রক্ষণাবেক্ষণ করলেও পুরো বাড়ীর সংস্কার করতে অপারগ।
তাই তিনি সরকারি সহায়তার দাবী তোলার পাশাপাশি মনে করেন এই বাড়ী হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পাক।কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এগিয়ে আসুক এমনটাও চান রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের নাতি দেবেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, ,রামানন্দ বাবুর নিজের উপার্জনে তৈরি একটি বাড়ী ছিল শহরের স্কুলডাঙ্গায়। সেখানে তিনি সেই সময় মর্ডান রিভিউ, প্রবাসীর সম্পাদনাও করতেন।একসময় এই বাড়ী অধিগ্রহণের প্রস্তাব উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।এবং সেই বাড়ী বিক্রি করে দেন তাঁর উত্তরসুরিরা।রামানন্দ বাবুর স্মৃতি বিজড়িত সেই বাড়ী ভেঙ্গে এখন গজিয়ে উঠেছে নতুন বাড়ী।
এখন একনাত্র রামানন্দ বাবুর পাঠকপাড়ার জন্মভিটে জরাজীর্ণ হলেও টিকে আছে। এই বাড়ীটিকেই হেরিটেজ ঘোষণার দাবী ওঠার পাশাপাশি, বাড়ীটির রক্ষনাবেক্ষণ ও জরুরি হয়ে পড়েছে। এভাবে রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত তার জন্ম ভিটের জরাজীর্ণ দশা জেলা তথা সারা দেশের সাংবাদিকদের কাছে লজ্জার সামিল।তাই এই ইস্যুতে প্রতিটি সাংবাদিককে এগিয়ে আসার অনুরোধ রইল।
👁️দেখুন 🎦ভিডিও। 👇