জঙ্গলমহল খাতড়া

একশো দিনের কাজে দেশের সেরা বাঁকুড়া,জঙ্গল মহলে ড্রাগন ফ্রুটের চাষ,আর ঊষর মুক্তিতেই মিলল শিরোপা।

একশো দিনের কাজে দেশের সেরা বাঁকুড়া,জঙ্গল মহলে ড্রাগন ফ্রুটের চাষ,আর ঊষর মুক্তিতেই মিলল শিরোপা।
X

#বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : একশো দিনের কাজে ড্রাগন ফ্রুটস থেকে বন সৃজন, হাপাডোবা সহ তসরের গুটি চাষ পাশাপাশি ঊষর মুক্তি প্রকল্পে জমির জল ধারন,ও জল বিভাজিকা তৈরি করে দেশের মধ্যে সেরা হল বাঁকুড়া।

একশো দিনের কাজে সম্পদ সৃষ্টিতে নজীর গড়ে প্রথম হওয়ার শিরোপার স্বীকৃতি হিসেবে আগামী ১৯ শে ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক দিল্লীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে পুরস্কার তুলে দেবে। বাঁকুড়ার পাশাপাশি, এ রাজ্যের কুচবিহার পেয়েছে দ্বিতীয় স্থান। দিন কয়েক আগেই একশো দিনের কাজ খতিয়ে দেখতে বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলমহলের রানীবাঁধ ও হীড়বাঁধ ব্লক পরিদর্শনে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। হায়দ্রাবাদ থেকে আসা উচ্চপর্যায়ের দুই বিশেষজ্ঞ পরিদর্শন করেন জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ ও হিড়বাঁধ ব্লক।ওই দিন রানিবাঁধ ব্লকের বিরবাঁধ ও ধবাকচা এই দুটি গ্রাম তারা পরিদর্শন করেন বেশকয়েক ঘন্টা ধরে। বিরবাঁধ গ্রামে ৫২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে সম্পদ তৈরি হয়েছে এনআরইজিএস প্রকল্পে।যার মধ্যে হাপাডোবা হয়েছে ১৩ টি। আরও ৩৭ টি বানানোর কাজ চলছে। সেগুন ও সোনাঝুরি মিলিয়ে গাছ লাগানো হয়েছে ১৬ হাজার। ফলের গাছ লাগানো হয়েছে ৫০০ টি। এছাড়া,২৫০০ টি অর্জুন গাছ লাগিয়ে,তাতে তসরের গুটি পালন করা হচ্ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বেগুন, টমেটো, লঙ্কা,অড়হড় ডাল সহ নানা শাক, সব্জী চাষ করছেন। এখানকার ৬টি স্বনির্ভর দলের মহিলারা এতে রোজগারের মুখও দেখছেন।

রানিবাঁধের বিডিও শুভদীপ পালিত জানান, এখানকার জমিতে আগে কোনও চাষ আবাদ হতনা।একশো দিনের কাজে সেখানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের যুক্ত করে সম্পদ তৈরি হচ্ছে।বিরবাঁধ গ্রামে ১০০ দিনের কাজের আওতায় প্রথম শুরু হয়েছে 'ঊষরমুক্তি' প্রকল্প। এই প্রকল্পে মাটির তলার জল ধরন ক্ষমতা বাড়ানোর ও ভূমি ক্ষয় রোধ এবং জমির উর্বরতা বাড়িয়ে সফলতা মিলেছে। রানিবাঁধের ধবাকচা গ্রামটিতে এনআরইজিএস প্রকল্পে তৈরি হয়েছে একটি আইসিডিএস সেন্টারও। আর রয়েছে ড্রাগন ফ্রুটের বাগান। যা দেখে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলে প্রশংসাও

করেছেন বলে জানা গেচগে। এছাড়া, হীড়বাঁধ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের বৃক্ষরোপণের কাজ নজর কাড়ে প্রতিনিধি দলের। দুটি ব্লকেই সাধারন মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা জেনে নেন একশো দিনের কাজ সবাই ঠিক মতো পান কিনা, সবার জব কার্ড রয়েছে কিনা,মজুরী ঠিক সময় মেলে কিনা, প্রভৃতি। পাশাপাশি, জঙ্গলমহলের এই সব এলাকা থেকে পূব খাটতে যাওয়ার প্রবনতা কমেছে কিনা তাও ছিল স্বীকৃতির জরিপের মাপকাঠি। এসবে উত্তীর্ণ হওয়ায় বাঁকুড়া ছিনিয়ে নেয় সেরার শিরোপা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই স্বীকৃতির জন্য বাঁকুড়া জেলার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অভিনন্দন জানান।

জেলার এনআরইজিএস প্রকল্পের নোডাল অফিসার জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, একশো দিনের কাজে সম্পদ তৈরিতে আমরা দেশে সেরা হয়েছি মুলত পিছিয়ে পড়া জঙ্গল মহলের দুই ব্লকে কাজের নিরিখে। যা,আমাদের সবার পরিশ্রমের ফল। অন্যদিকে, জেলাশাসক উমা শঙ্কর এস এই সাফল্যের জন্য একশো দিনের প্রকল্পের সাথে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি, বলেন এই স্বীকৃতি আমাদের দ্বায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিল। জেলায় এই প্রকল্পের কাজে সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকব।

Next Story