ব্রেকিং নিউজ

মর্মান্তিক! একই দিনে বজ্রপাতে জেলার ৬ থানা এলাকা মিলিয়ে ৯ জনের মৃত্যু,গ্রামে,গ্রামে শোকের ছায়া।

একদিনে জেলায় এভাবে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড। সুত্রের খবর, জেলা পুলিশের পাশাপাশি,জেলা প্রশাসনের তরফে বিডিও এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আগামী কাল থেকে বজ্রপাতের ফলে মৃত্যু ঠেকাতে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য প্রচার চালানো হবে।

মর্মান্তিক! একই দিনে বজ্রপাতে জেলার ৬ থানা এলাকা মিলিয়ে ৯ জনের মৃত্যু,গ্রামে,গ্রামে শোকের ছায়া।
X

বাঁকুড়া২৪x৭প্রতিবেদন : বজ্রপাতে একই দিনে বাঁকুড়া জেলার ছয় থানা এলাকায়,তিন মহিলা সহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া,বেশ কয়েকজন জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত হতে থাকে। সেই সময় মাঠে কাজ করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। জেলার ওন্দা থানা এলাকাতেই মৃত্যু হয় চার জনের৷ পুলিশ জানিয়েছে,মৃতরা হলেন, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের তিলকা মাল (৪৯), ভাদুলডাঙ্গা গ্রামের জবা বাউরি (৩৮), কামারকাটা গ্রামের নারায়ণ শর (৪৮) এবং ছাগুলিয়া গ্রামের প্রতিমা রায় (৪১)। এরা সকলেই দুপুরে মাঠে কাজ করার সময় আচমকা বজ্রপাত হলে, দুর্ঘটনা স্থলেই লুটিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে, তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চার জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।

একই দিনে কোতুলপুরে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে জিয়াউল হক মোল্লা (৫০) নামে এক ব্যক্তির। তাঁর বাড়ি খিরি গ্রামে। পাত্রসায়রে মৃত্যু হয়েছে জীবন ঘোষ (৫০) নামে একজনের। তাঁর বাড়ি কাঁটাবন গ্রামে। এছাড়া ইন্দাস থানা এলাকার বাঙ্গালচক গ্রামের বাসিন্দা শেখ ইসমাইল মন্ডল (৬০) বজ্রপাতে প্রাণ হারান। জয়পুরে মৃত্যু হয়েছে উত্তম ভুঁইয়ার (৩৮)। তিনি খরিকাশুলি গ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ। দুর্ঘটনার সময় সকলেই মাঠে চাষের কাজ করছিলেন। সেই সময় বজ্রপাত হলে তাঁরা প্রাণ হারান।এছাড়া, বিষ্ণুপুরে বজ্রপাতে প্রাণ হারান মদন বাগদি নামে এক বছর ৭০ এর বৃদ্ধ। তিনি বিষ্ণুপুর থানার বৈকুন্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা।পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,এদিন দুপুরে গরুর খোঁজ করতে তিনি নদীর পাড়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় বাজ্রপাতে তাঁর প্রাণ যায়।

একই সাথে বজ্রাপাতে জেলার ওন্দা, কোতুলপুর, ইন্দাসে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। একলপ্তে জেলায় ৯ জনের মৃত্যু জেলার প্রশাসনিক মহলেও আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। গ্রামে গ্রামে স্বজন হারানোর কান্নার রোল পড়ে গিয়েছে। নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারী জানিয়েছেন,যেহেতু আগামী কালও বৃষ্টি ও বজ্রপাতের পুর্বাভাস রয়েছে তাই মাঠে কাজে যাওয়ার সময় মানুষজনকে সতর্ক থাকার ক্ষেত্রে সচেতন করতে, প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তিনি, মাঠে কাজে যাওয়ার পাশাপাশি বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় সকলকে খোলা জায়গায় এড়িয়ে চলার অনুরোধ করেছেন৷ একটু সচেতন থাকলেই এমন মৃত্যু সহজেই এড়ানো সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।

ফি বছর বর্ষার মরসুমে জেলায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ঠিকই। তবে, একদিনে জেলায় এভাবে বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড। সুত্রের খবর, জেলা পুলিশের পাশাপাশি,জেলা প্রশাসনের তরফে বিডিও এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আগামী কাল থেকে বজ্রপাতের ফলে মৃত্যু ঠেকাতে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য প্রচার চালানো হবে। বজ্রপাতের সময় স্কুল গুলিতে ছুটির সময় হয়ে গেলেও, পড়ুয়াদের স্কুলের মধ্যে নিরাপদে রেখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যেন ছুটি দেওয়া হয়, সেই নির্দেশও জারি করবে জেলার শিক্ষা দপ্তর। গ্রামের বোদ্ধাদের আক্ষেপ,আগে গ্রাম জুড়ে প্রচুর তাল গাছ থাকত। ফলে বাজ পড়লেও তালগাছ মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে দিত। এখন অবাধে তাল গাছ কেটে নেওয়া।

এবং, নতুন করে তালগাছ না লাগানোর ফলে, বজ্রপাতে সারা জেলাতেই মাঠের কাজ করতে গিয়ে মাঠেই প্রাণ হারানোর হার বেড়ে গিয়েছে। তাই দাবী,উঠছে জেলার বন দপ্তর ও কৃষি দপ্তর যুগ্মভাবে তালগাছ লাগানোর কর্মসুচিতে বিশেষ জোর দিক। এখন, দেখার জেলায় কেন্দ্রীয় ভাবে বাজ পড়ে মৃত্যুর হার কমাতে কি,কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়? তার ওপরই নির্ভর করবে এই মৃত্যু হারের হ্রাস।


* জেলা জুড়ে লাল সতর্কতা

Next Story