মল্লভুম বিষ্ণুপুর

বিষ্ণুপুরে কুকুরের মড়ক, তিন দিনে মৃত্যু ২০০ ছাড়াল,ভাইরাস চিহ্ণিত করতে কলকাতায় পাঠানো হল নমুনা।

বিষ্ণুপুরে কুকুরের মড়ক, তিন দিনে মৃত্যু ২০০ ছাড়াল,ভাইরাস চিহ্ণিত করতে কলকাতায় পাঠানো হল নমুনা।
X

বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : করোনা আবহের মধ্যে কুকুরের মড়ককে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়াল মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরে। বিষ্ণুপুর পুরসভার হিসেবে গত তিন দিনে মৃত কুকুরের সংখ্যা ২০০ ছাড়াল। পুরসভার হিসেবে মঙ্গলবার ৬০টি,বুধবার ৯৭ টি এবং বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৪৫ টি কুকুরের মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। দুপুরের পর সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। এই অস্বাভাবিক ঘটনা নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসে বিষ্ণুপুর পুর প্রশাসন। পুর প্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় তড়িঘড়ি মগকুমা প্রশাসনের নজরে আনেন। সেখান থেকে বিষয়টি বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনেরও কানে আসে। একসাথে এত কুকুর মারা যাওয়ার ঘটনা জেলায় নজির বিহীন।

তাই এই মৃত্যুর কারণ জানার ওপর গুরুত্ব দেয় প্রশাসন এমনকি রাজ্যস্তরেও জানানো হয় পুরো ঘটনা।পাশাপাশি, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে একটি সারমেয়র ময়না তদন্তও করা হয় এবং কোন ভাইরাসের সংক্রমণে এই মড়ক সৃষ্টি হয়েছে তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এই রিপোর্ট হাতে এলেই কুকুর মৃত্যুর রহস্যভেদ হবে।


তবে,ময়নাতদন্তে যে প্রাথমিক রিপোর্ট মিলেছে তাতেও আভাস মিলেছে যে এক ধরনের ভাইরাল সংক্রমণের ফলেই এই সারমেয়দের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিষ্ণুপুর সরকারি পশু চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক মৃণালকান্তি দে জানিয়েছেন,লক্ষণ ও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট থেকে যেটুকু অনুমান করা যাচ্ছে তার নিরিখে এটা এক ধরণের ভাইরাল ইনফেকশন।

আবহাওয়া জনিত কারণেই প্রতিবছর এই সময় ভাইরাল সংক্রমণ ঘটে থাকে। কুকুর মারাও যায়। তবে, এত বেশী সংখ্যায় কখনও নয়। এবার সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিয়েছে। তবে কেন এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতির আকার নিল? তা জানতেই নমুনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।


তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, যে প্রাথমিক ভাবে যে সংক্রমণের কথা তারা অনুমান করছেন সেটা হলে ভয়ের কিছু নেই। কারণ এক্ষেত্রে সংক্রমণ কুকুরের থেকে কুকুরের শরীরে ছড়ালেও তা অন্য কোন পশু কিংবা মানুষের শরীরে সঞ্চারিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তাই অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোন প্রোয়জন নাই। তবে, পুরো পরুস্থিতির ওপর পশু চিকিৎসক থেকে বিষ্ণুপুর পুরসভা নজরদারি চালাচ্ছেন। মৃত কুকুরের দেহ পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কুকুর যেখানে মারা যাচ্ছে সেখানেও জীবানু নাশক ব্যহহার করা হচ্ছে।


এখন, যদি নুতন কোন ভাইরাসের সংক্রমণে এই ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবী এতে সংক্রমণ কুকুরের শরীর থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণের আশঙ্কা নেই। যদিও,কেও,কেও প্রশ্নও তুলেছেন এত সংখ্যক কুকুরের মৃতুর নেফথ্যে করোনার কোপ আছে কিনা?


তাও পরীক্ষা করে দেখা দরকার। তবে এসবই নিছল জল্পনা ছাড়া কিছু নয়! তাই কলকাতা থেকে রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত অযথা আতঙ্কিত হবেন না,আতঙ্ক ছড়াবেনও না। সকল মল্লভুমবাসীর কাছে অনুরোধ রইল। তবে নিজের এলাকায় কুকুরের মৃত্যু ঘটনা নজরে এলেই তা সাথে,সাথে পুরসভার নজরে আনুন। এবং নিজে ও বাড়ীর বাচ্চা এবং বয়ষ্কদের কুকুরের মরদেহ থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখুন। আর সবসময় মুখ মাস্কে ঢেকে রাখুন। মনে রাখবেন সতর্কতা রোগকে এড়ানোর প্রধান হাতিয়ার।

Next Story