পড়াশোনা ২৪X৭

শিক্ষকদিবসে রাজ্যের ৫২ জনকে শিক্ষারত্ন,১৩ টি স্কুলকে সেরার শিরোপা,জেলা থেকে কারা রয়েছেন তালিকায়? জেনে নিন।

শিক্ষা দপ্তর সুত্রে জানানো হয়েছে,এবার মাত্র পাঁচ জন শিক্ষককে অনুষ্ঠান মঞ্চে সরাসরি শিক্ষারত্ন পুরস্কার নিজে হাতে তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।বাকিদের প্রতি জেলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে দুপুর ১টায়।

শিক্ষকদিবসে রাজ্যের ৫২ জনকে শিক্ষারত্ন,১৩ টি স্কুলকে সেরার শিরোপা,জেলা থেকে কারা রয়েছেন তালিকায়? জেনে নিন।
X

বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : আজ শিক্ষক দিবসে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর শিক্ষারত্ন শিরোপা প্রদান করবে ৫২ জন শিক্ষককে। এর মধ্যে রয়েছেন কলেজ ও এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন অধ্যাপক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ের ২৫ জন ও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্যের নির্বাচিত ১৩টি বিদ্যালয়কে দেওয়া হবে সেরা বিদ্যালয়ের পুরস্কার।বাঁকুড়া জেলা থেকে এ বছর ‘শিক্ষারত্ন’ পাচ্ছেন বাঁকুড়ার লোকপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গোরাচাঁদ কান্ত এবং সোনামুখীর মদনপুর জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দময় ঘোষ।

বাঁকুড়া জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরা জানান এদিন জেলা থেকেসেরা বিদ্যালয়ের শিরোপা পাবে বাঁকুড়ার পোয়াবাগানের বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল।আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে শিক্ষা দফতর শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষারত্ন ও সেরা বিদ্যালয়ের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু উপস্থিত থাকবেন। রাজ্য শিক্ষা দপ্তর সুত্রে জানানো হয়েছে,এবার মাত্র পাঁচ জন শিক্ষককে অনুষ্ঠান মঞ্চে সরাসরি শিক্ষারত্ন পুরস্কার নিজে হাতে তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।

বাকিদের প্রতি জেলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। এই অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে দুপুর ১টায়।বাঁকুড়া লোকপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গোরাচাঁদ কান্ত স্মার্ট ক্লাসের মাধ্যমে পঠন পাঠন শুরু করে শিক্ষা দপ্তরের নজর কাড়েন।তার স্বীকৃতি হিসেবেই তিনি এবার শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাচ্ছেন। গোরাচাঁদ বাবুর বড়জোড়ার বেলুট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনায় হাতেখড়ি। তারপর দধিমুখা উচ্চবিদ্যালয়ে পাঠ শেষ করে ইংরেজিতে স্নাতক হন রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজ থেকে এবং ইংরেজিতে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্কুলে নিয়মিত স্মার্ট ক্লাস চালু করে নজর কাড়েন তিনি।

পাশাপাশি, পড়ুয়াদের তামাক বন্ধে ও স্মার্ট ফোনের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে একগুচ্ছ কর্মসূচি নেন তিনি।একই সাথে সচেতনতার প্রচারও চালান তিনি। করোনা-কালে দুঃস্থ পড়ুয়াদের বাড়িতে বইখাতা, খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন নিজের উদ্যোগে। তার স্কুলে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকেই সিংহভাগ পড়ুয়া আসে।তাই এই পড়ুয়াদেরকে পাঠ দেওয়া এবং ড্রপআউট ঠেকানোই বড়ো চ্যালেঞ্জ তার কাছে।আর সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় তিনি সফল।অন্যদিকে, জেলার সোনামুখীর মদনপুর জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দময় বাবুর শিক্ষকতা শুরু ১৯৯৯-এ পাত্রসায়রের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

২০০৫ থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে কয়েক দিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারান তিনি। দাদু, ঠাকুমা ও পিসির কাছে তার বেড়ে ওঠা। প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে লড়াই করে সফল আনন্দ বাবু প্রাথমিক পড়ুতাদের আনন্দ পাঠের মাধ্যমে শিক্ষার কাঙ্খিত মানে উন্নীত করে নজর কাড়েন শিক্ষা দপ্তররের। তার বিদ্যালয় ২০১৮-এ নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার পায়। বিদ্যালয়ে রয়েছে ফুল, ফল, ভেষজ উদ্যান, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থাও তিনি গড়ে তুলেছেন স্কুল চত্বরে। করোনার সময় পাড়ার মন্দিরে নিয়মিয় পড়ুয়াদের পাঠ দিয়েছেন তিনি।পাশাপাশি,পরিবেশ-বান্ধব ইট (ইকো ব্রিকস) তৈরিতে উদ্যোগে পড়ুয়াদের যুক্ত করেন।

অভিভাবকদের মধ্যে বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম নিয়ে সচেতনতা প্রচার।আনন্দ বাবুর রোজ নামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার স্বীকৃতি হিসেবেই এবার তিনি রাজ্যের ৫২ জন শিক্ষারত্ন প্রাপক শিক্ষকদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন।এবার রাজ্যের ১৩ টি সেরা স্কুলের তালিকায় রয়েছে বাঁকুড়ার পোয়াবাগানের বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল।বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল থেকে এ বছর মাধ্যমিকে ছ’জন পড়ুয়া রাজ্যের মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। এই বিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে ৩৫০০ জন এবং বাংলা মাধ্যমের ১২০০ ছাত্র- ছাত্রী রয়েছে। প্রধান শিক্ষক তপনকুমার পতি বলেন:

তার স্কুল রাজ্যে সেরার শিরোপা পাওয়ায় তিনি খুশী।পাশাপাশি, তিনি জানান,এবার আরো দায়িত্ব বাড়ল।তবে স্কুলের সকল শিক্ষকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলেই এই সাফল্য বলে তিনি মনে করেন।

Next Story